1. rowshonsavar@gmail.com : admin2021 :
  2. rowshonsavar@gmail.com : Rowshon Ali : Rowshon Ali
April 20, 2024, 3:13 am

আশুলিয়ার ইয়ারপুরে কারখানার বিষাক্ত পানির জলাবদ্ধতায় জনদূর্ভোগ চরমে

  • আপডেট টাইম : Thursday, June 7, 2018
  • 137

বাংলা ফটো নিউজ : সাভারে আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের নয়নজুলি খাল দখল ও ভরাট করে ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও শিল্প কারখানা স্থাপন করায় এলাকার পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে গেছে। ঐতিহ্যবাহী একমাত্র খালটি দিয়ে বিভিন্ন কারখানার অপরিশোধিত কেমিকেল মিশ্রিত দূষিত পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টিতে জনদূর্ভোগ চরমে উঠেছে। দুষিত এ পানির প্রভাবে বিভিন্ন ধরনের রোগবালাই দেখা দিয়েছে। এর হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না গবাদিপশু, লোহার আসবাবপত্র ও টিনের চালা। কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য মিশ্রিত পানিতে মরে যাচ্ছে পুকুরের মাছও।

অবৈধভাবে খাল দখল ও ভরাটের প্রতিবাদে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ইয়ারপুর ইউনিয়নের জিরাবো পুকুরপাড়া এলাকার লুসাকা গ্রুপ খালের মধ্যে সরু পাইপ দিয়ে তার উপর দিয়ে স্থাপনা তৈরি করেছে। পার্শ্ববর্তী শ্রীখন্ডিয়া গ্রামের আমান স্পিনিং মিল নামক কারখানার কিছু অংশ এ খাল ভরাট করে নির্মান করায় খালের পানি প্রবাহ থেমে গেছে। যে কারনে সারাবছরই সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা।

শুধু তাই নয় কারখানা থেকে অপরিশোধিত পানি সরাসরি খালে ফেলায় কৃষিজমিতে ফসল চাষ করা যাচ্ছে না। ক্ষতিকর কেমিক্যাল মিশ্রিত পানির কারনে এলাকাবাসীয় গাছপালা, বাড়ীর টিন, মাছের খামার, গবাদি পশুর খামার নষ্ট হয়ে গেছে। জমিতে ফসল উৎপাদন করতে না পারায় ক্ষতিগ্রস্থরা নামমাত্র মূল্যে কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে কৃষিজমি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন বলেও জানা গেছে।

স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্থ উজ্জ্বল হাসান বলেন, বহু বছর ধরে পৈত্রিক প্রায় সাড়ে ৫ বিঘা জমির উপর মাছের চাষ, গরুর খামার, হাস-মুরগির খামার, গবাদি পশু চাষ, সবজি চাষ, ও বিভিন্ন ফলজ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করতাম। কিন্তু কয়েক বছর পূর্বে আমান স্পিনিং কারখানা নয়ন জুলি খাল দখল করার পর থেকে এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়াও আশপাশে গড়ে উঠা বিভিন্ন কারখানার কেমিক্যাল মিশ্রিত অপরিশোধিত বর্জের পানিতে আমার পুকুরের প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকার মাছ নষ্ট হয়ে গেছে, সবজি চাষ করা যাচ্ছে না, ফলজ গাছগুলো মরে যাচ্ছে। এমনকি ঘরের টিনগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আমার আয়ের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। বৃষ্টি ছাড়াও সারা বছর এখন দূষিত বর্জ্যে ডুবে থাকে আমার প্রজেক্টটি। একাধিক বার অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছি না।

এলাকার প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তি অর্থের জন্য খালটি ভরাট করে বিক্রি করে দিয়েছে। পানি নিষ্কাশনের জন্য খালের উপর কয়েকটি কালভার্ট থাকলেও তার সামনে-পেছনে ভরাট করে গড়ে তুলা হয়েছে বসতবাড়ি ও শিল্প কারখানা। ফলে পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

ভুক্তভোগীরা জানান, এক সময় এ খালে বিভিন্ন ধরনের মাছ পাওয়া গেলেও এখন কেবলই স্মৃতি। পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না রেখে খালটি ভরাট করে গড়ে মিল কারখানা ও বসতবাড়ি গড়ে তোলায় পুরো এলাকায় পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বিভিন্ন ডাইং ও ওয়াসিং কারখানার বিষাক্ত বর্জের কারণে লোহাজাতীয় বিভিন্ন আসবাবপত্র এবং ঘরের টিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

বিষাক্ত বর্জ্য মিশ্রিত পানির দুর্গন্ধ এবং জলাবদ্ধতা নিরসনে অবিলম্বে খালটি উদ্ধার করে তা খননের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।

ইয়ারপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ আহমেদ ভূইয়া বলেন, সরকারি খাল দখলের বিষয়টি একাধিকবার ভূমি অফিস, পরিবেশ অধিদফতর ও নদী রক্ষা কমিশনকে জানানো হয়েছে।

সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ রাসেল হাসান বলেন, সাভার-আশুলিয়ার বিভিন্ন স্থানে খাল দখলের বিষয়ে সার্ভে চলছে। কিছুদিন আগে নদী রক্ষা কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সরেজমিনে এসব জায়গা পরিদর্শন করেছেন। খুব শিগগিরই যৌথভাবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 Bangla Photo News
Theme Customized By BreakingNews