সাভারে ভুয়া ডিবি পরিচয়ে প্রাইভেটকারে তুলে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে টাকা দাবি ও আদায়ের অভিযোগে কথিত দুই সাংবাদিক ও এক পুলিশ কনস্টেবলসহ তিনজনকে আটক করেছে সাভার মডেল থানা পুলিশ। এসময় আরও একজন পালিয়ে গেছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় সাভার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী মো. শাওন (২৩)।
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কারকুন।
এর আগে একই দিন ভোরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারের ফুলবাড়িয়া বাস স্ট্যান্ড এলাকা থেকে তাদের আটক করে পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাইকাজে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার, একটি স্টিলের হ্যান্ডকাফ এবং দৈনিক একুশের বাণী ও দৈনিক আজকের সংলাপ নামের দুটি পত্রিকার পরিচয় পত্র জব্দ করা হয়।
আটকরা হলেন- ঝিনাইদহের কোর্ট চাঁদপুর থানায় আলোকদিয়া এলাকার মো. শহিদুল ইসলামের ছেলে মো. জহিরুল ইসলাম (৪১), শরিয়তপুরের পালং থানার মাহমুদপুর এলাকার মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে এনামুল হক শামীম (৩৬), রাজবাড়ীর পাংশা থানার পিপুলবাড়িয়া এলাকার মো. নুরুল ইসলামের ছেলে মনিরুল ইসলাম (২৭)। এঘটনায় সোহেল (৩০) নামে অপর অভিযুক্ত পলাতক রয়েছে।
মামলার এজহার সুত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী শাওন পেশায় একজন ওয়ার্কশপের কর্মচারী ১৭ সেপ্টেম্বর রবিবার রাতে কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে অভিযুক্তরা নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাঁর গতিরোধ করে তাঁর নিকট মাদক আছে বলে জোরপূর্বক তাদের প্রাইভেটকারে তুলে তাঁর হাতে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে মারধর করতে থাকে এবং বাসায় ফোন দিয়ে ২০ হাজার টাকা দাবি করতে বলে। পথিমধ্যে ফুলবাড়িয়া এলাকায় এসে মো. সুমন হোসেন ও ইমরান নামে অপর দুই পরিবহন শ্রমিককেও একই পদ্ধতিতে ডিবি পরিচয়ে গাড়িতে তুলে মাদকের কথা বলে টাকা দাবি করে। এরইমধ্যে ভুক্তভোগী শাওনের মা ও তাঁদের প্রতিবেশি নিরব নামে একজন এসে অভিযুক্তদের ৪ হাজার টাকা দিলে তারা শাওনকে ছেড়ে দেয়। পরে অপর দুই ভুক্তভোগীর হাতে হ্যান্ডকাফ লাগালে তাঁরা চিৎকার করতে থাকলে আশপাশের লোকজন এসে জড়ো হলে অভিযুক্তদের মধ্যে থাকা সোহেল নামে একজন দৌড়ে পালিয়ে যায়। এ সময় উপস্থিত লোকজনের মধ্যে রফিক নামে একজন জরুরি সেবা নাম্বার-৯৯৯ এ ফোন করলে সাভার মডেল থানা থেকে পুলিশ এসে অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে আটক জহিরুল ইসলাম ও এনামুল হক শামীম নিজেদের সাংবাদিক হিসেবে এবং মনিরুল ইসলাম পুলিশের কনস্টেবল হিসেবে পরিচয় দেয়। পরে তাদের সেখান থেকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কারকুন বলেন, আজ ভোরে ভুয়া ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাইকালে একটি অপরাধী চক্রের তিন সদস্যকে আটক করা হয়েছে। পরে ভুক্তভোগীর দায়ের করা একটি চাঁদাবাজি মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে সাতদিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
Leave a Reply