বাংলা ফটো নিউজ : কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা আজ সোমবার দুপুর পৌনে ১টা থেকে শাহবাগে অবস্থান নিয়েছে। ফলে সেখানে যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। শেষ খবর পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা সেখানে অবস্থান করছে।
এর আগে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ সোমবার সকাল থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ধর্মঘট পালন করছে তারা।
জাতীয় সংসদে দেয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোটা বাতিলের ঘোষণা দ্রুত প্রজ্ঞাপন আকারে জারি না হওয়ায় দেশব্যাপী ছাত্রধর্মঘট পালন করছে আন্দোলনকারীরা।
শাহবাগে অবস্থানকালে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেছেন, প্রজ্ঞাপন জারি না হলে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
সোমবার সকালে ঢাবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হন হাজারো শিক্ষার্থী। এসময় কোনো কালক্ষেপণ না করে অবিলম্বে চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারে প্রজ্ঞাপন জারির আহ্বান জানিয়ে স্লোগান দেন তারা।
সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এসে জড়ো হন। পরবর্তীতে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঢাবির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অনুষদ, ইন্সটিটিউট এবং ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করেন তারা। এ সময় মিছিলে মিছিলে পুরো ক্যাম্পাস বিক্ষোভমুখর হয়ে পড়ে। বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা, ‘আর নয় কালক্ষেপণ, দিতে হবে প্রজ্ঞাপন’, শেখ হাসিনার ঘোষণা, বাস্তবায়ন করতে হবে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীরা পরে মিছিল নিয়ে কার্জন হল – দোয়েল চত্বর – সুপ্রীম কোর্ট হয়ে শাহবাগ মোড়ে এসে অবস্থান নেয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অবরোধ চলাকালীন বেশ কয়েকটি বিভাগের ক্লাস বর্জন করে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে শিক্ষার্থীরা। তবে কোনো পরীক্ষা বন্ধের খবর পাওয়া যায়নি। সরেজমিন দেখা গেছে, কলা অনুষদের পাঁচ তলার পরীক্ষার হলে পরীক্ষা দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে কোটা প্রথা সংস্কারের দাবিতে বিভিন্ন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে আসছিল শিক্ষার্থীরা। গত ৮ এপ্রিল শাহবাগ অবরোধ করে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু পুলিশ তাদের টিয়ারশেল, লাঠিচার্জ এবং রাবার বুলেট নিক্ষেপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে হস্তক্ষেপ করলে দেশব্যাপী বিক্ষোভে ফেটে পড়ে গোটা ছাত্রসমাজ। সে রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবনে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও তাণ্ডব চালায় দুর্বৃত্তরা। পরে এ আন্দোলন নিয়ে দেশব্যাপী তুমুল আলোচনা-সমালোচনার মুখে জাতীয় সংসদের অধিবেশন চলাকালীন ১১ এপ্রিল কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর থেকে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশের দাবি জানাচ্ছে আন্দোলনকারীরা। পরে সরকার সমর্থিত নেতাকর্মীরা বিভন্ন সময় এ ব্যাপারে আশ্বাস দিলেও ঘোষণার ৩২ দিন পরেও প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি।
৯ এপ্রিল ঢাবির মানববন্ধন থেকে ১০ এপ্রিলের মধ্যে প্রজ্ঞাপনের দাবি জানান। অন্যথায় ১৩ এপ্রিল থেকে তারা ফের আন্দোলনের নামার ঘোষণা দেন তারা। পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কোটা সংস্কারে কমিটি গঠনের প্রস্তাব পাঠায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। কমিটি গঠনের এ উদ্যোগকে আন্দোলন ভণ্ডুলের ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনকারীরা।
Leave a Reply