1. rowshonsavar@gmail.com : admin2021 :
  2. rowshonsavar@gmail.com : Rowshon Ali : Rowshon Ali
October 29, 2025, 1:01 pm

সুনামগঞ্জ পৌরসভার উপ নির্বাচনে সংর্ঘষে পুলিশ সহ আহত ২০

  • আপডেট টাইম : Thursday, March 29, 2018
  • 293

বাংলা ফটো নিউজ : সুনামগঞ্জ পৌরসভার উপ-নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী নাদের বখত নৌকা প্রতীক নিয়ে ১৬ হাজার ৩৫২ ভোট পেয়ে বেসরকারী ভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী স্বতন্ত্রী প্রার্থী হাছন রাজার প্রোপৌত্র দেওয়ান গনিউল সালাদনি মোবাইল ফোন প্রতীক নিয়ে ৯ হাজার ৪৮৫ ভোট পেয়েছে এবং ধানেরশীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপির প্রার্থী ১ হাজার ৮০৭ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন। ব্যালট পেপার ছিনতাই, উত্তেজনা, টিয়ার সেল নিক্ষেপের মধ্য দিয়ে শেষ হলো সুনামগঞ্জ পৌরসভার উপ-নির্বাচন। উপ-নির্বাচনের ভোট গ্রহনের সময় ব্যালট পেপার ছিন্তাই করা কে কেন্দ্র করে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আ’লীগ প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংর্ঘষ হয়। এ নিয়ে এলাকার চরম উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সাধারণ ভোটরদের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়েছিল।

সুনামগঞ্জ পৌরসভা মেয়র পদে উপ-নির্বাচনে ব্যালট পেপার ছিনতাই, কেন্দ্র দখল ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের অভিযোগ এনে নির্বাচন প্রত্যাখান করেছেন দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী। সেই সাথে সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে পুন:নির্বাচনের দাবী জানিয়েছেন তারা। দুপুর আড়াইটায় নির্বাচনের প্রধান প্রতিদ্ব›দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান গনিউল সালাদীন শহরের তেঘরিয়াস্থ নিজ বাস ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন প্রত্যাখানের এই ঘোষনা দেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন সালাদীনের সহোদর ও সাবেক সাংসদ দেওয়ান শাসসুল আবেদীন, দেওয়ান সামারীনসহ অসংখ্য কর্মী সমর্থক। একই দাবীতে দুপুর ৩টায় জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি মনোনীত প্রার্থী দেওয়ান সাজাউর রাজা সুমন এর পক্ষে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। শহরের পুরাতন বাসষ্ট্যান্ড এর দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্টিত এই সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সাংসদ কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সাবেক হুইফ ফজলুল হক আসফিয়া, জেলা বিএনপি’র সেক্রেটারী নুরুল ইসলাম নুরুল, সাংগঠনিক সম্পাদক ও তাহিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল, জেলা বিএনপি নেতা নাদের, সেলিম উদ্দিন ভোট্টো, মোনাজ্জির হোসেন সুজন প্রমূখ।

জেলা বিএনপির সভাপতি প্রেস বিফিংকালে সুনামগঞ্জ পৌর উপ-নির্বাচনকে তামাশার নির্বাচন উল্লেখ করে বলেন ফলাফল যদি আগেই নির্ধারিত থাকে তাহলে ঘটা করে নির্বাচনের আয়োজন করার কি দরকার ছিল? তিনি বলেন দুপুর ১২টার আগেই প্রত্যেকটি কেন্দ্র সরকার দলীয় লোকজন দখল করে আমাদের এজেন্টদের বের করে দিয়েছে। ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে দেখেন তাদের ভোট দেওয়া হয়ে গেছে। আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনে দলীয় ক্যাডাররা ব্যালট পেপারে সিল মেরেছে। তিনি প্রহসনের এই নির্বাচন প্রত্যাখান করে সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে পুনরায় নির্বাচন অনুষ্টানের দাবী জানান। স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান গনিউল সালাদীন বলেন, পৌরসভার ২৩টি কেন্দ্রের মধ্যে অধিকাংশ কেন্দ্র সরকার দলীয় লোকজন সকাল থেকে নিজেদের দখলে নিয়ে নেয়। সেখান থেকে আমার লোকজনকে জোরপূর্বক বের করে দিয়ে সাধারণ ভোটারগনের মধ্যে ভীতির সৃষ্টি করে। এসময় দলীয় লোকজন ব্যালট পেপারে সিল মারতে থাকে। আইনশৃংখলা বাহিনীর কাছে বার বার অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। সকাল সাড়ে ১০টায় উত্তর আরপিননগর কেন্দ্র থেকে ব্যালট পেপার ছিনতাই করে নিয়ে যায় এবং দুপুর দেড়টার দিকে একই কেন্দ্রে সাধারন ভোটাররা ভোট দিতে গেলে বাধা দেওয়া হয়। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধলে আইনশৃংখলা বাহিনীর সামনেই নৌকা সমর্থকরা আমার বাড়িতে হামলা চালায়, আমার লোকদের উপর আক্রমন করে তাদের আহত করে। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ ভোটারগনের তথা শহরবাসীর জানমালের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে নির্বাচন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান তিনি। সেই সাথে কারচুপির নির্বাচন বাতিল করে সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে পুনরায় নির্বচন দেওয়ার দাবী জানান এই স্বতন্ত্র প্রার্থী।

এদিকে কেন্দ্র দখল ও পাল্টা দখলের ঘটনায় রণক্ষেত্রে পরিনত হয় একটি ভোট কেন্দ্রে। সকালে নৌকা সমর্থক লোকজন উত্তর আরপিননগর কেন্দ্র থেকে ব্যালট পেপার ছিনতাই করলে নির্বাচন কমিশণ থেকে ছিনতাই হওয়া ব্যালট পেপারগুলো বাতিল ঘোষনা করা হয়। এসময় কিছু সময়ের জন্য ভোট গ্রহন বন্ধ থাকলেও প্রশাসনের সহযোগীতায় পুনরায় ভোট গ্রহন চলে। দুপুর ১টার দিকে আবার সরকার দলীয় লোকজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর ভোটারদের ভোট প্রদানে বাধা প্রদান করলে উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এতে পুলিশ কনষ্টেবল সাইফুরসহ উভয় পক্ষে অন্তত ২০জন আহত হয়। প্রায় ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ শতাধিক রাইন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ‍নিক্ষেপ করে। এদিকে বেলা ১১টার দিকে পিটিআই কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশের সাথে সরকার দলীয় সমর্থকদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একই সময় মল্লিকপুর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, কালিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, কেন্দ্রের ভিতরে নৌকা সমর্থক লোকজন মহড়া প্রদর্শন পূর্বক সাধারণ ভোটারগনের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। বুলচান্দ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটার এডভোকেট শাহাবুদ্দিন জানান দুপুর ২টার দিকে ভোট দেওয়ার জন্য কেন্দ্রে গেলে সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা জানান তার ভোট দেওয়া হয়ে গেছে। হাছননগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটার নাদের বলেন, কেন্দ্রে গিয়ে দেখি আমার ভোট দেওয়া হয়ে গেছে। ভোটের একটি বড় সংখ্যা ভোট গ্রহনের পূর্বেই কাষ্ট করা হয়েছে বলে দাবী করেন তিনি।

একই অবস্থা প্রায় প্রতিটি কেন্দ্রেই। অপরদিকে বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে গিয়ে জানাযায়, ডিজিটাল আইডি কার্ডের সাথে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া ভোটার তালিকার নম্বরের মিল না থাকায় প্রতি কেন্দ্রেই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোটার তাদের ভোট প্রদান থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এটিকে অনেক ভোটাররা নির্বাচন কমিশনের ডিজিটাল জালিয়াতি বলে অভিহিত করছেন।

জেলা নির্বাচন কমিশেনর অফিস সুত্রে জানাযায়,পৌরসভায় ২৩ টি কেন্দ্রের মধ্যে ১০ টি ছিল গুরুত্বপুর্ন কেন্দ্র এ নির্বাচনে হালনাগাদ তালিকানুযায়ী পৌর এলাকায় ২৩টি কেন্দ্রে ভোটার রয়েছেন ৪২ হাজার ৩২২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২১ হাজার ১৪৯ নারী ২১ হাজার ১৭৩ জন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 Bangla Photo News
Theme Customized By BreakingNews