বাংলা ফটো নিউজ : খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে সরকার একদলীয় শাসন কায়েম করতে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি শুক্রবার এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বলেন, খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে ধ্বংস করলেই সরকারের একদলীয় শাসন পরিপূর্ণ রূপ পাবে। খালেদা জিয়ার অসুস্থতার বিষয়ে আজকে দেশের মানুষের মনে প্রশ্ন জেগেছে। তার অসুস্থতার নাম করে বিদেশে পাঠানোর গভীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে। অথচ উনার অসুস্থতা কি, সেই বিষয়েও দেশের মানুষের মনে প্রশ্ন জেগেছে। কারণ আজকে যারা ক্ষমতা অবৈধভাবে দখল করে আছে, বেগম জিয়াকে নিয়ে তাদের উদ্দেশ্যের বিষয়ে মানুষের মনে সন্দেহ আছে। কেননা বেগম জিয়া হচ্ছেন, একদলীয় শাসনের অন্তরায়। তাকে তিলে তিলে ধ্বংস করলেই তাদের একদলীয় শাসনের পরিপূর্ণ রূপ পাবে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের তৃতীয় তলার কনফারেন্স লাউঞ্জে ‘দুর্নীতি-দু:শাসন বিরোধী দিবস ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি’ শীর্ষক এ সভার আয়োজন করে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)। সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপকস রেহানা প্রধানের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব:) সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিম, জাগপার সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, সহসভাপতি ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুর রহমান খান, সৈয়দ শফিকুল ইসলাম, বেলায়েত হোসেন মোড়ল, সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, ইনসান আলম আক্কাছ, জাগপা নেতা গোলাম মোস্তফা কামাল, আরিফ হোসেন ফিরোজ, যুব জাগপা নেতা আরিফুল হক তুহিন, রিয়াজ রহমান, নজরুল ইসলাম বাবলু, জাগপা ছাত্রলীগ নেতা রাকিবুল ইসলাম রুবেল, আব্দুর রহমান ফারুকী প্রমুখ।
খালেদা জিয়াকে নিয়ে সরকারের উদ্দেশ্য কি তা কেউ জানে না উল্লেখ করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বেগম জিয়ার কি অসুখ? তা আমরা জানি না। কিন্তু তারা বলছেন অসুস্থ। এক মন্ত্রী বলছেন, বিদেশে পাঠানো হবে। বাংলাদেশের মানুষ জানলো না বেগম জিয়ার অসুস্থতা কি? সেই বিষয়ে আমরা কেউ জানলাম না এবং উনার পরিবার জানলো না। এরমধ্যে বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার কথা চলে আসলো। তাই মানুষের মনে এ সরকারকে নিয়ে সন্দেহ আছে এবং তাদের উদ্দেশ্য মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ।
তিনি বলেন, ৭৪’র প্রেক্ষাপট ২০১৮ সালের বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেশ দুই মেরুকরণে বিভক্ত। শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিকভাবে স্বৈরতন্ত্রের মালিক এবং গণতন্ত্রের জন্য আজীবন সংগ্রামের জননী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের মালিক। তাই শাসকগোষ্ঠি অন্যায়ভাবে জালিয়াতির মামলা দিয়ে ১৮ কোটি মানুষের কর্ণধারকে কারাগারে নিক্ষেপ করেছে।
সুতরাং খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে সরকার একদলীয় শাসন কায়েম করতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, দেশে আইনের শাসন, বিচার বিভাগ, মানবাধিকার ভুলুন্ঠিত। মানুষ ন্যায় বিচার পাচ্ছে না। শাসকের পছন্দের বিচারপতি দিয়ে বিচার বিভাগ চলতে পারে না। যা রাষ্ট্রের জন্য চরম লংঘন।
তিনি বলেন, দুর্নীতির ছায়া সরকার দেশের বড় অংকের টাকা বিদেশে পাচার করেছে। এখন ব্যাংক আমানতকারীদের টাকাও ব্যাংক থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছে। জনগণ সরকারকে দুর্নীতির সার্টিফিকেট দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। পরিশেষে বিদায়ও অনিবার্য।
দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অসুস্থতার নাম করে বিদেশে পাঠানোর গভীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রের খেলা বন্ধ করুন- দেশনেত্রীকে মুক্তি দিন।
মরহুম শফিউল আলম প্রধানের স্মৃতিচারণ করে আমীর খসরু বলেন, ৭৪’র শেখ মুজিবের শাসনামলে ৬৪ জন দুর্নীতিবাজদের তালিকা প্রকাশ করে তিনি যে সাহসীকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন আজ তিনি বেঁচে থাকলে ২০১৮ সালে এই দুর্নীতির তালিকা ৬৪ হাজার ছাড়িয়ে যেতো। বর্তমান আওয়ামী লীগ পুরোপুরি দুর্নীতিবাজ, অগণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক রেহানা প্রধান বলেন, ষড়যন্ত্র করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে নির্বাচনের ফাঁদ পাতানো হলে জনগণই রুখে দেবে। তিনি অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করেন।
Leave a Reply