1. rowshonsavar@gmail.com : admin2021 :
  2. rowshonsavar@gmail.com : Rowshon Ali : Rowshon Ali
October 30, 2025, 3:16 pm

হজযাত্রায় দালালদের দাপট

  • আপডেট টাইম : Tuesday, April 3, 2018
  • 328

বাংলা ফটো নিউজ : হজযাত্রায় এ বছরও মধ্যস্বত্বভোগী তথা দালালদের দাপট চলছে। হাজীদের কাছ থেকে পুরো টাকা নিলেও তা সঠিকভাবে এজেন্সি মালিকদের কাছে জমা দিচ্ছে না দালালেরা। হজনীতিমালায় এ-সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট বিধান না থাকা ও কম টাকা দিয়ে নিবন্ধন করার সুযোগ দেয়ায় সুবিধা নিচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীরা। সম্প্রতি এমন একটি ঘটনায় ‘আকবর হজ গ্রুপ বাংলাদেশ’ নামে একটি এজেন্সি মালিক ও মধ্যস্বত্বভোগীদের বিরুদ্ধে হজযাত্রীদের নিবন্ধন না করে বিপুল অঙ্কের টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পরে হজের বিভিন্ন পর্যায়েও চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন হজ সংশ্লিষ্টরা।

জানা যায়, গত ১ মার্চ থেকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের মূল নিবন্ধন শুরু হয়। তবে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধন শুরু হয় ৬ মার্চ থেকে। কয়েক দফা সময় বাড়ানোর পরও নির্দিষ্ট কোটা পূরণ না হওয়ায় আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত সময় বাড়িয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। ধর্ম মন্ত্রণালয় আইটি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত ৮টা পর্যন্ত সরকারি ব্যবস্থাপনায় ছয় হাজার ৭৪০ কোটার বিপরীতে নিবন্ধন করেছেন পাঁচ হাজার ৯৫৩ জন। এখনো বাকি রয়েছে ৭৮৭ জন। ১৬ হাজার ৭৫ থেকে ১৬ হাজার ৮৫০ ক্রমিকের মধ্যে থাকা প্রাক-নিবন্ধিত হজযাত্রীরা এ খালিস্থানে নিবন্ধন করার সুযোগ পাবেন।

বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় তিন হাজার চার শ’ হজগাইড বাদে কোটার মোট এক লাখ ১৬ হাজার ৬০০ জনের বিপরীতে গতকাল পর্যন্ত নিবন্ধন করেছেন ৯৬ হাজার ৮৭২ জন। ফলে এখনো বাকি রয়েছে ১৯ হাজার ৭২৮ জন। প্রাক-নিবন্ধনের তিন লাখ ৫২ হাজার ২৯৪ ক্রমিক থেকে তিন লাখ ৭২ হাজার ৬৫৬ ক্রমিক পর্যন্ত হজযাত্রীরা নিবন্ধনের সুযোগ পাবেন।

সরকার এ বছর দু’টি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করে। এর মধ্যে প্যাকেজ-১ এ তিন লাখ ৯৭ হাজার ৯২৯ টাকা এবং প্যাকেজ-২ এ তিন লাখ ৩১ হাজার ৩৫৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়। বেসরকারি এজেন্সিকে প্যাকেজ-২ এর টাকার নিচে কোনো প্যাকেজ ঘোষণা না করার নির্দেশ দেয় মন্ত্রণালয়। সে হিসেবে বেসরকারি এজেন্সি মালিকদের সংগঠন হাব গত ৫ মার্চ এক সংবাদ সম্মেলন করে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় সর্বনিম্ন প্যাকেজ নির্ধারণ করে তিন লাখ ৩২ হাজার ৮৬৮ টাকা। তবে নিবন্ধনের জন্য প্রথমে সর্বনিম্ন এক লাখ ৩৮ হাজার ১৯১ টাকা সংশ্লিষ্ট এজেন্সির ব্যাংক একাউন্টে জমা দিয়ে নিবন্ধন করার সুয়োগ রাখা হয়। বাকি টাকা ১৫ এপ্রিলের মধ্যে এজেন্সিকে পরিশোধ করার নিয়ম করা হয়।

কয়েকজন হজ এজেন্সি মালিকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে দেশের প্রায় ৭০ শতাংশ বেসরকারি হজযাত্রী মধ্যস্বত্বভোগী গ্রুপ লিডারদের মাধ্যমে এজেন্সিতে বুকিং দেয়। সরাসরি হজযাত্রী ও হজ এজেন্সির মধ্যে কোনো যোগাযোগ নেই। হাবের পক্ষ থেকে সর্বনি¤œ প্যাকেজ তিন লাখ ৩২ হাজার ৮৬৮ টাকা নির্ধারণ করলেও এক লাখ ৩৮ হাজার ১৯১ টাকা দিয়ে নিবন্ধনের সুযোগ দেয়ায় মধ্যস্বত্বভোগীরা এজেন্সি মালিককে শুধুমাত্র এক লাখ ৩৮ হাজার ১৯১ টাকা দিয়ে হজযাত্রীদের নিবন্ধন করে নিচ্ছেন। কিন্তু পরে বাকি টাকা তারা যদি আর না জমা দেন সেক্ষেত্রে এজেন্সি মালিকেরা এসব হজযাত্রীর বিমান টিকিট, সৌদিতে বাড়ি ভাড়া, মোয়াল্লেম চুক্তিসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজ করতে পারবেন না। এতে হজযাত্রায় গত বছরের মতোই ফ্লাইট বিপর্যয়সহ চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। গত ১ এপ্রিল প্রাথমিকভাবে নির্দিষ্ট করা ক্রমিক পর্যন্ত নিবন্ধনের শেষ দিনে পল্টনের ‘আকবর হজ গ্রুপ বাংলাদেশ’ এ হজযাত্রীরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন ওই অফিস তালাবদ্ধ। এজেন্সির মালিককে ফোন করেও তারা পাননি। তারা অভিয়োগ করেন, এজেন্সির মালিক তাদের চূড়ান্ত নিবন্ধন না করেই বিপুল অঙ্কের টাকা নিয়ে পালিয়েছেন। এ ঘটনার পর হজযাত্রী ও এজেন্সির মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

এ দিকে এ বছরও বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে হজ নিবন্ধন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা যায়, ২০১৬ সালে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় মোট সর্বনিম্ব প্যাকেজ মূল্য ছিল তিন লাখ চার হাজার ৯০৩ টাকা। এ বছর প্রাক-নিবন্ধনের সময় জমা নেয়া হয় ৩০ হাজার ৭৫২ টাকা। চূড়ান্ত নিবন্ধনের বাকি টাকা ছিল দুই লাখ ৭৬ হাজার ১৫১ টাকা। পুরো টাকা দিয়ে প্রায় বহুসংখ্যক এজেন্সি নিবন্ধন করেছিল। কিন্তু গুটিকয়েক এজেন্সি হজের নামে ব্যাংক থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে নিবন্ধন সম্পন্ন করার কাজ করেন। বিষয়টি ধর্মমন্ত্রী জানতে পেরে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান। সে সময়ে কয়েকজন সিনিয়র হজ এজেন্ট মন্ত্রীকে বুঝিয়ে কেবল মাত্র ওই বছরের জন্য টিকিটের টাকা রেখে নিবন্ধনের অনুরোধ জানালে ধর্মমন্ত্রী এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আদেশ দান করেন। কিন্তু দেখা যায় গত বছরও ওই ধারা অব্যাহত রেখে টিকিটের টাকা রেখে নিবন্ধন করায় হজ ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। হজ ফ্লাইট বিপর্যয়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়।

এ বছরও বিভিন্ন ব্যাংক থেকে কিছু এজেন্সি ঋণ নিচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান সম্প্রতি বলেন, ব্যাংক থেকে ঋণের নামে হজ প্যাকেজের পুরো টাকা জমা দিয়ে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে হজে যাওয়ার কোনো বিধান নেই। গত হজ মওসুমে এ ধরনের কিছু প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। চলতি বছর ব্যাংক ঋণ দেখিয়ে হজাত্রীদের নিবন্ধন স¤পন্ন করার সুযোগ দেয়া হবে না। কোনো বাণিজ্যিক ব্যাংক বেসরকারি হজ এজেন্সির সাথে আঁতাত করে হজযাত্রীদের ঋণ দেয়ার নামে নিবন্ধনের সুযোগ দিলে দায়ী ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বেসরকারি হজ এজেন্সি মালিকদের সংগঠন হাবের মহাসচিব শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, আমরা এজেন্সি মালিককে পুরো টাকা জমা নিয়ে নিবন্ধন করার জন্য বলেছি। তারা যদি কম টাকা নিয়ে নিবন্ধন করেন সে ক্ষেত্রে আমাদের কী করার আছে? এক লাখ ৩৮ হাজার ১৯১ টাকা নিয়ে নিবন্ধন করার সুযোগ দেয়ায় ব্যাপারে তিনি বলেন, ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে পুরো টাকা জমা দেয়ার জন্য। কারণ আমরা জানি নিবন্ধন এ সময় পর্যন্ত চলবে। আকবর হজ গ্রুপের বিষয়ে তিনি বলেন, একটি ঘটনা ঘটে গেছে। এ রকম ঘটনা যাতে আর না ঘটে সেজন্য আমরা চেষ্টা করছি। আমরা মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবস্থা বন্ধ করতে চাই। আশা করি আমরা সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারব।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (হজ) হাফিজ উদ্দিন বলেন, হজ ব্যবস্থাপনায় মধ্যস্বত্বভোগীদের রুখতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আকবর হজ গ্রুপ বা অন্য কোনো মধ্যস্বত্বভোগীদের বিষয়ে কোনো অভিযোগ পেলে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেবো।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 Bangla Photo News
Theme Customized By BreakingNews